May 4, 2024, 7:25 pm
সর্বশেষ:
মেঘনায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় মাদ্রাসার বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করেছে অধ্যক্ষ মেঘনায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় একাধিক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দুদকের পরিচালক থেকে মহাপরিচালক পদে পদন্নোতি পেলেন শিরিন পারভীন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মন্ত্রী–এমপিদের চাপে মাঠ প্রশাসন,  স্পিকারকে চিঠি দেবে ইসি মেঘনায় পাকের ঘরে রাতে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা মেঘনায় ফেসবুক ‘ফেক’ আইডির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর অভিযোগ শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হেট্ট্রিক করতে ভোটারের দ্বারেদ্বারে শিরিন মেঘনায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

শহীদ বেদিতে জুতা পায়ে না উঠতে শপথ করালেন ওসি

৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১,বিন্দুবাংলা টিভি. কম,

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : শহীদ মিনার,ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে নির্মিত এটি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারীর ভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মৃতি সকলের মাঝে অমর করে রাখার উদ্দেশ্যেই নির্মিত হয় এটি। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের চিত্রটি ঠিক যেন ভিন্ন।

শুধুমাত্র মহান শহীদ ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের সময়ে ধোয়ামোছা করেই একদিন কিনবা দুইদিনের জন্য রক্ষা করা হয় এই শহীদ মিনারের সন্মানটি। আর বাকী সময়টি যেন পড়ে থাকে অবহেলায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যেন জুতো পায়েই শহীদ মিনারে বসে আড্ডায় লিপ্ত হয়ে পরে অনেকই। দেখার যেন নেই কেউ………

তবে এবারে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করলেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম। হঠাৎ মাঠে এসেই চমকে দিলে সকলকেই। শহীদ মিনারের উপরে জুতো পায়ে বসে আড্ডায় লিপ্ত হওয়া মানুষদের দিয়েই পরিস্কার করালেন মিনারটি। সেই সাথে মিনারে জুতো পায়ে না উঠা ও শহীদদের সন্মান ক্ষুন্ন না করার বিষয়ে শপথ পাঠ করালেন তিনি।

শনিবার(০৬ ফেব্রয়ারী) বিকালে ঠিক এমনি একটি চিত্র চোখে পড়ে। ওসির এমনি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেন জেলা বিভিন্ন স্থরের মানুষেরা।

সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনারে জুতো পায়ে উঠে সেখানে আড্ডায় লিপ্ত হওয়ায় মানুষদের কাছে গিয়ে তাদের আটকালেন থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম সহ তার সঙ্গীয় ফোর্স। এরপর তাদের বুঝাতে শুরু করলেন ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারীর ভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের বিষয়ে। পরে তাদের দ্বারাই পরিস্কার করালেন মিনারটি। সেই সাথে মিনারটি রক্ষা ও শহীদদের সন্মান রক্ষায় নিজ উদ্যোগে মিনারের চারো পাশে বাঁশ দিয়ে ঘেড়াও দেয়া প্রæতিশ্রæতি দিলেন ওসি।

বড় মাঠের পাশে কথা হয় পথচারী আকবর আলীর সাথে। তিনি পুলিশের এমনি উদ্যোগকে সাধুবাধ জানিয়ে বলেন,প্রতিদিন বিকালে মাঠে হাটতে আসা হয়। কিন্তু এখানে আসলে একটি জিনিস দেখে খুব কষ্ট হয়। সেটি হলো এই যে তরুণ থেকে শুরু করে অনেক বয়স্ক মানুষেরা শহীদ মিনারের উপরে জুতো পায়ে বসে থাকে আড্ডা দেয়। তারা যানেন না যে এই মিনারটির মর্যাদা কি। খুব কষ্ট দায়ক বিষয়। মানা করলে অনেকে আবার উল্টো গালাগালি পর্যন্ত করে। তবে আজ পুলিশের এমন একটি উদ্যোগ দেখে আমি অনেক ধন্য। ধন্যবাদ জানাই জেলা পুলিশকে।

আরেক পথচারী জয়নাল আবেদিন বলেন, হঠাৎ করে মাঠে এভাবে থানার ওসি সহ পুলিশের কর্মকর্তারা এসে একটি চমক দিলো। যারা মিনারে বসে আড্ডা দেয় তাদের বুঝিয়ে তাদের দ্বারাই মিনার পরিস্কার করালেন ও তাদের বুঝালেন শহীদদের মর্যাদা আসলে কি। সত্যি বিষয়টি খুব ভালো লাগলো। তবে এই শহীদ মিনার রক্ষায় যদি আরো কঠোর উদ্যোগ নেয়া হয় অনেক ভালো হবে বলে আমি মনে করি।

অবশেষে কথা হয় ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, শুধু ফেব্রæয়ারী মাস আসলেই আমার শহীদের সন্মান করবো,আর বাকী দিনগুলো সন্মান করবোনা,জুতো পায়ে মিনারে উঠবো এটা ঠিক নয়। যাদের জন্য আমরা কথা বলতে পাড়ছি,যাদের রক্তের বিনিময়ে এই আন্তজার্তিক মাতৃভাষা পালন করছি আজ তাদের জন্যই আমরা নিজেকে পরিবর্তন করতে পাড়বোনা কেন??? আমরা চাইলে সব সম্ভব।

ওসি আরো বলেন, আমি মনে করি শহীদদের অপমান করে জুতো পায়ে মিনারে উঠা মানে একটা জাতীকে অপমান করা। ভাষা আন্দোলনের ব্যাপারে সকলকে জানতে হবে। আমি আজ এসে কিছু মানুষের দ্বারা এটি পরিস্কার করিয়েছি। এটা তাদের খারাপ লাগতে পরে। তবে তারা যানেন না যে তারা কোন মহৎ কাজটি করেছেন।

শহীদদের অপমান করার অধিকার কারো নেই। আমি এরপর এই শহীদ মিনারের রক্ষার ক্ষেত্রে এখানে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিবো। পাশাপাশি চেষ্টা করবো মিনারটির চারোপাশে বাঁশ দিয়ে দড়ি টাংগানোর। যাতে কেউ মিনারে জুতো পায়ে না উঠে। এরপরেও যদি কেউ শহীদদের অপমান করে মিনারে জুতো পায়ে উঠে আর আমার নজরে যদি পরে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা