March 28, 2024, 7:04 pm

চলছে না সেই ‘গরিবের অ্যাম্বুলেন্স’

রাজশাহীর বাঘায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ‘গরিবের অ্যাম্বুলেন্স’। গ্রামাঞ্চলের রোগী পরিবহণের জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকেই রূপ দেওয়া হয়েছিল ‘অ্যাম্বুলেন্সে’। কম খরচে জরুরি সেবা পাওয়া যেত বলে স্থানীয়ভাবে এমন নামকরণ হয়েছিল ‘গরিবের অ্যাম্বুলেন্স’। এর সুবিধা ভোগ করত প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সে সেবামূলক কার্যক্রম।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে এলজিএসপি-২-এর (লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট) বরাদ্দপ্রাপ্ত টাকায় গ্রামাঞ্চলের রোগী পরিবহণের জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকেই রূপ দেওয়া হয়েছিল ‘অ্যাম্বুলেন্সে’। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুমূর্ষু রোগীরা জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে চিন্তা থেকেই এ সেবা চালু করা হয়। বিশেষ করে যানবাহন সংকটের অজুহাতে বেশি ভাড়া আদায়ের রেওয়াজ ভাঙতে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নপর্যায়ে চালু করা হয়েছিল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালু করা হয়েছিল। একইভাবে চরবেষ্টিত চকরাজাপুর ইউনিয়নে নৌকায় সেই সেবা প্রচলিত ছিল। সাড়ে ১৭ হাজার টাকা ভ্যাট ও অন্যান্য খরচসহ দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা অ্যাম্বুলেন্সের ছাদে ঘূর্ণায়মান লাল আলো বিচ্ছুরণের জন্য লাগানো হয়েছিল সাইরেন হর্ন। আর ভেতরে ছিল দুই সিটের গদি আটা আসনে সাহায্যকারী ও রোগীর শুয়ে-বসে থাকার সুব্যবস্থা। ২৪ ঘণ্টা সার্ভিসের জন্য থাকা ফোন নম্বরে কল করে ঠিকানা জানিয়ে দিলেই বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে হাজির হতো রোগী পরিবহণের সেই গাড়ি। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সন্তানসম্ভবা নারীসহ মুমূর্ষু রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে সহজেই আনা-নেওয়া করা যেত।

ইউনিয়ন থেকে উপজেলা

হাসপাতালের দূরত্ব অনুসারে পরিবহণ খরচ নির্ধারণ করা ছিল ৫০ থেকে ১শ’ টাকা। যাত্রী বহনের ভাড়ার টাকা থেকে ব্যয় করা হতো, চালকের বেতন, ব্যাটারি চার্জ ও অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের খরচ। খরচ বাদে বাড়তি টাকা ইউনিয়ন পরিষদের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হতো। পালা করে পরিবহণের দায়িত্ব দেওয়া হতো দফাদার ও গ্রাম পুলিশকে।

বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ জানান, নিয়মিত না চালানোর কারণে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে অকেজো পড়ে আছে। তারা জানান, একটি ব্যাটারি বদলাতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাগে। এ বিষয়ে কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ব্যাটারি বদলানো সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা