April 23, 2024, 3:44 pm

মানবিক “পুলিশ কর্মকর্তা “

২৬ জুন ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, আবদুল হক :

  মহামারীর সময় যেমন মানুষের মানবিক দিক উন্মোচিত হয়, তেমন কিছু লোকের মাঝে লুকিয়ে থাকা অসুর মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। কিন্তু মানবিক দিকটি আমাদের মাঝে আশা সঞ্চার করে। পথ চলতে উনুপ্রেরণা জোগায়। তেমনই একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসারের সন্তান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি কামরুল ফারুক।

করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই মানুষকে মুগ্ধ করেছে এ পুলিশ অফিসারের কার্মকাণ্ড। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১৬ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয় সামাজিক বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে। তাদের করোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে তার অবদান অস্বীকারের উপায় নেই। তারা সুস্থ হওয়ার পর কাজের উৎসাহ যোগাতে তাদেরকে ২৩ মে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করা হয়।

শুধু কি তাই, করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি। ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে রাইয়ান ফারুক লামীমের আবদার ছিলো একবারের জন্য হলেও বাবার

সঙ্গে সাক্ষাতের। ছেলের বায়নাটি রাখতে পারেনি তিনি।

থানার পুলিশ সদস্যারা যাতে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে এজন্য সব সদস্যদের মধ্যে একধিকবার সুরক্ষাসামগ্রী মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, গ্লাবস ও পিপিই বিতরণ করেছেন।

তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের অসহায় মানুষদের মাঝে সরকারের তরফ থেকে যেসব খাদ্যসামগ্রী এসেছে তার সঠিক বণ্টন করেছেন। খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝেও। এছাড়াও প্রতিবন্ধী, পরিবহন শ্রমিক, স্কুল শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজিমরা পেয়েছেন ওসি কামরুলের খাদ্য সহযোগিতা। যারা চক্ষুলজ্জায় ত্রাণ নিতে আসতে পারেন না, তাদেরকে গোপনে বাসায় ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। রাতের আধাঁরে অসহায় মানুষ খুঁজে তাদের দোয়াকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে ঘরে রাখতে সম্ভব্য সব ধরণের পদক্ষেপও গ্রহণ করেন তিনি। লকডাউনের কারণে খাদ্য সংকটে ভুগে নিম্ন আয়ের মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে তাদের জন্য ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। ১২ এপ্রিল ১২০ জন দরিদ্রের মাঝে খাদ্য বিতরণের মাধ্যমে শুরু করেন তার ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম।

১৬ এপ্রিল শতাধিক রিকশা চালকের মধ্যে, ১৯ এপ্রিল তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মাঝে ও ২১ এপ্রিল হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতরণ করেন ত্রাণ সামগ্রী।  ৩০ ও ৩১ এপ্রিল আড়াই শতাধিক পরিবহন শ্রমিক ও অসহায়দের মধ্যে তিনি ত্রাণ বিতরণ করেন। ২৪ মে নারী ও পুরুষ প্রতিবন্ধদের মধ্যে ত্রাণ বিরতণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে বা গোপনে তিনি ১০৭২টি অসহায় পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তা করেন। মোবাইলের ম্যাসেজ ও ফোন পেয়ে প্রায় শতাধিক অসহায় ব্যক্তির কাছেও ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।

ওসি কামরুল ফারুক বলেন, করোনার মহামারী থেকে সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিআইজির নির্দেশক্রমে এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সাধ্যানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা