April 16, 2024, 1:07 pm
সর্বশেষ:
মেঘনায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত মেঘনায় কাঁঠালিয়া প্রজন্ম সামাজিক সংস্থার ঈদ সামগ্রী বিতরণ মেঘনায় বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ঈদ আনন্দে ভাটা, নিরসন জরুরি এততান কিরতি আনছত, ঘরে আছেনা! মেঘনায় গণ ও যুব অধিকারের ইফতার বিতরণ রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী মৎসজীবী লীগ : খোকন সভাপতি শরীফ হোসেন সম্পাদক মেঘনায় দোকানে আগুনের ঘটনায় বাবাসহ দুই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথম বারের মত শতভাগ অনলাইনে মনোনয়ন ফরম জমা দিবে প্রার্থীরা : মো.মুনীর হোসাইন খান রিটার্নিংকর্মকর্তার সাথে আচরণ বিধির মতবিনিময়ের পরেই এক প্রার্থী অপর প্রার্থীকে হুমকির অভিযোগ 

পৃথিবীর ফুসফুস পুড়ে যাচ্ছে

২৩ আগস্ট ২০১৯, বিন্দুবাংলা টি.. কম, ডেস্ক রিপোর্ট :

পৃথিবীতে যতটুকু অক্সিজেন আছে তার ২০ শতাংশ আসে আমাজন বন থেকে। প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এই বন। যে কারণে এটাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুসথ বলা হয়।

এছাড়া পৃথিবীর বেশিরভাগ নদীর উৎস আমাজন। এখানে রয়েছে ৪৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়, বাস করে তিন শতাধিক উপজাতি। অথচ ‘পৃথিবীর ফুসফুসথ খ্যাত আমাজন আজ হুমকির মুখে। প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই বন পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স (আইএনপিই) বলছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত আমাজনের ব্রাজিল অংশে ৭২ হাজার ৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের তুলনায় যা ৮০ শতাংশ বেশি এবং ২০১৩ সালের তুলনায় দ্বিগুণ।

সংস্থাটির হিসাব মতে, দাবানলে প্রতি মিনিটে আমাজন প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে। এভাবে পুড়তে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী আন্দোলনে বিশাল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।

৭০ লাখ বর্গ কিলোমিটার অববাহিকা পরিবেষ্টিত এই জঙ্গলের প্রায় ৫৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকাটি মূলত আর্দ্র জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত। ৯টি দেশ জুড়ে এই অরণ্য বিস্তৃত। আমাজন জঙ্গলের ৬০ ভাগ ব্রাজিলে, ১৩ ভাগ পেরুতে এবং বাকি অংশ রয়েছে কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম এবং ফরাসি গায়ানায়।

২০১৩ সাল থেকে আমাজন বনে অঙ্গিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে গবেষণা করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স। গত ২০ আগস্ট প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, অ্যামাজন বন রেকর্ড হারে পুড়ছে। ইতোমধ্যে ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, অ্যামাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসো অঞ্চলের কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। আমাজন বনে আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়। তবে সেখানে এবারের মতো আগুন আগে কখনও ছড়ায়নি।

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার উপগ্রহ চিত্রেও ধরা পড়েছে আমাজনের ৯ হাজার ৫০৭টি নতুন দাবানলের চিত্র। আমাজনের আগুনের ওপর নজর রাখছে নাসা। আগুনের তীব্রতার ছবিও পাঠাচ্ছে নাসার একাধিক স্যাটেলাইট। তবে আগুনের থেকেও বিজ্ঞানীদের বেশি ভাবিয়ে তুলছে আগুন থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া।

সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাজন বন থেকে ২৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্রাজিলের সাও পাওলো। সেখানকার আকাশও ঘন কালো হয়ে আছে। সূর্যের মুখ ঢাকা পড়েছে। চারদিকে শুধু কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া। সবুজ বনের ওপর দিয়ে লাল অগ্নিশিখা বয়ে বেড়াচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট প্রকল্প কোপের্নিকাস আগুনের ধ্বংসযজ্ঞের একটি ম্যাপ প্রকাশ করেছে। ব্রাজিল থেকে পূর্ব আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত ‘আগুন পথেরথ চিহ্ন আঁকা হয়েছে। দেশটির অর্ধেক জায়গাজুড়েই এখন কালো ধোঁয়া। সেই ধোঁয়া পার্শ্ববর্তী পেরু, বলিভিয়া এবং প্যারাগুয়েতেও পৌঁছে গেছে।

স্থানীয় পরিবেশবিদদের ধারণা, এই আগুন প্রাকৃতিকভাবে লাগেনি। তাহলে কীভাবে লেগেছে? ব্রাজিলের ফেডেরাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন, শুকনো বাতাসে দাবানল জ্বলে ওঠা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এ ক্ষেত্রে দাবানলের প্রকোপে আগুন লাগেনি বলেই মনে করছেন তারা। বিজ্ঞানীদের মতে, অনেক সময়েই চাষের জন্য জমি বা খামার তৈরি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে জঙ্গলে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। সেখানেও এমনটাই হচ্ছে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জলবায়ুবিজ্ঞানী কার্লোস নোব্রে বলেছেন, গবাদিপশুর চারণভূমি হিসেবে জমি ব্যবহারের জন্য জায়গা পরিষ্কার করতে শুকনো আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন কৃষকরা। এ সময় আমাজন বনে খুব সহজেই আগুন লাগিয়ে দেয়া যায়। যদিও সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের গবেষক নোব্রের মতে, আমাজনে কর্মরত এনজিওগুলো কৃষিকাজে আগুন ব্যবহার করে না। বরং লোকজনকে আগুন ব্যবহার না করতে উৎসাহিত করে তারা।

আমাজনে এই পরিস্থিতির জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর নীতিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পরিবেশবিদরা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার আগে আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করেই আমাজন অঞ্চলকে চাষ ও খনিজ উত্তোলনের কাজে ব্যবহারের কথা বলেছিলেন তিনি। তার এ উদ্যোগের ফলে বন উজাড় হয়ে যেতে পারে, আন্তর্জাতিক মহলের এমন উদ্বেগ দিনের পর দিন উপেক্ষা করে গেছেন বোলসোনারো। ফলস্বরূপ আমাজনে অন্তত ৭২ হাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য পশুপাখি।

তবে বোলসোনারো বলেছেন, তাকে অযথা দোষারোপ করা হচ্ছে। এই সময়ে আগুন জ্বালিয়ে চাষের জমি তৈরি করেন কৃষকরা। বহুকাল ধরেন সেটাই হয়ে আসছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্সের (আইএনপিই) পরিসংখ্যানকে ‘ভুয়াথ বলে উড়িয়ে দিয়ে সংস্থাটির পরিচালককে বরখাস্ত করে দিয়েছেন জাইর বোলসোনারো।

 


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা