April 18, 2024, 6:55 pm

করোনার বন্ধে এক মাদ্রাসার ২০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে!

১ ডিসেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যশোরের মণিরামপুরে মাধ্যমিকস্তরের একটি মাদ্রাসার ২০ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। গত দশমাসে উপজেলার পাড়িয়ালি আদর্শ বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই বিয়ের শিকার হয়। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দুইজন, সপ্তম শ্রেণির চারজন, অষ্টম শ্রেণির ছয়জন, নবম ও দশম শ্রেণির চারজন করে শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির সুপার আব্দুল হালিম মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুপারের দাবি, বাল্যবিয়ের খবর প্রশাসনকে দিয়ে তেমন কোন ফল আসে না। তাই করোনার বন্ধে ছাত্রীদের বিয়ের ব্যাপারে টের পেলেও প্রশাসনকে খবরগুলো জানাননি তিনি।

মাদ্রাসাটির শিক্ষকরা জানান, করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অসচেতন অভিভাবকরা মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেয়ার সুযোগ পেয়ে যান। বাড়িতে বিয়ে দিলে সমস্যা হবে ভেবে তারা বাইরের এলাকায় নিরাপদ স্থানে নিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। করোনার মধ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।

মাদ্রাসার শিক্ষক অম্বরীশ রায় বলেন, আমাদের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্বজনরা পুলেরহাট এলাকায় আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বাইরের এলাকায় হওয়ায় আমরা খবর পেয়েও কিছু করতে পারিনি।

মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হালিম পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক স্তরে ১৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। করোনার বন্ধে কয়েক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার খবর টুকটাক পাচ্ছিলাম। আমরা প্রতিষ্ঠানে নেই বলে খবর নিতে পারিনি। গত ১ নভেম্বর অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়ার জন্য মাদ্রাসা খোলা হয়। এরপর কয়েকজন ছাত্রী না আসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তখন হিসেব নিয়ে দেখি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনের বিয়ে হয়েছে।

‘আগে কয়েকবার ছাত্রীদের বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে ইউএনওকে জানিয়েছি। থানা থেকে পুলিশ এনে এক ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করেছি। কিন্তু পরে আবার অভিবাবকরা বাইরের এলাকায় নিয়ে গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। তাই করোনার বন্ধে ছাত্রীদের বিয়ের বিষয়টি প্রশাসনকে জানাইনি।’

মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, করোনার বন্ধে কতজন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে তেমন কোন তথ্য কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আমাদের জানাননি। এই ব্যাপারে কোন তথ্য আমার কাছে নেই।

মণিরামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার পূর্বপশ্চিমকে বলেন, করোনাকালীন ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া থেকে পহেলা ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা ১৭টি বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সবগুলো বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু পাড়িয়ালি বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রীদের বিয়ের ব্যাপারে মাদরাসার সুপার আমাদের কোনো খবর দেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা