April 26, 2024, 1:11 am

নিউ নরমাল বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবার ভবিষ্যৎ নেতাদের শিক্ষা থেকে দূরে রাখা কতটা যুক্তিযুক্ত?

১ জুন ২০২১,বিন্দুবাংলা টিভি. কম, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম:

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে শিক্ষা অন্যতম চাহিদা তার কারণ হলো মানুষের বিবেকবোধ কে জাগ্রত করে শিক্ষা। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষা ব্যতীত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব। খাবার যেমন শরীর সচল রাখে ঠিক শিক্ষা মানুষকে মনুষ্যত্বময় মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।

বৈশ্বিক মহামারী করোনা কোভিড19 কারণে গত এক বছরের অধিক সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, এই বন্ধ থাকার যেমন ঘোষণা আসে ঠিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ারও ঘোষণা আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে, এসেছেও ১৭ বার, কিন্তু কেউ কথা রাখেনি! এবারও ১২ ই জুন পর্যন্ত বন্ধ তারমানে ১৩ জুন থেকে ক্লাস ও ক্যাম্পাস মুখরিত হবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির দ্বারা। যদি সত্যি সত্যি হয় শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিষ্ঠান জড়িত শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ সকলের আনন্দের সীমা থাকবেনা। কিন্তু বড়ই পরীতাপের বিষয় হলো ভ্যাকসিনের দুষ্প্রাপ্যতা ও  শতভাগ কার্যকর না হওয়া, প্রতিশোধক প্রতিরোধ এর ব্যবস্থা না করে যুদ্ধের ময়দানে ছেড়ে দেওয়াটা সমিচিন হবে না।

পুজিবাদী ব্যবস্থার মানেুয়ের কল্যানের পথটা অনেকটা দূড়েই হয়। চাইলেও কেউ সে পথে হাটে না, আবার কেউ ক্ষানিকটা হাঁটার পর ফিরে আসে।

লোভী পৃথিবীতে এখনো ভালো কাজ বেঁচে আছে, চলছে, আশা কারি এ যুদ্ধে মানবতার জয় হবেই!

আমরা এটা কেখনো কি ভেবে সমাধান পেয়েছি ? যেখানে সরকারী চাকুরীজীবি শিক্ষক থেকে সব পেশার মানুষ শতভাগ বেতন বোনাস নিশ্চিত হয়েছে, সেই একই দেশে প্রাইভিট প্রতিষ্ঠান কিভাবে টিকে আছে? শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীর চাকুরী চলে গেছে তারা কারো কাছে হাতও পাততে পাড়ে নি, হ্যা আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করছে কালের এই করাল ঘ্রাসে।

শিক্ষকরা পেয়েছে ১৪ মাসে ৫ হাজার টাকা প্রনোদনা মাত্র যা প্রতিমাস হিসাবে আসে ৩৫৭ টাকা, আর কর্মচারীরা পেয়েছে ২৫০০ টাকা মাত্র  প্রতিমাস হিসাবে আসে ১৭৯ টাকা মাত্র। প্রতিদিনের হিসাবটা নাই বা করলাম, এতে কি তাদের অপমান করা হলো কি না আপনাদের কাছেই প্রশ্ন রয়ে গেল?

দেশে এখন দুটি শব্দের বেশি ব্যবহার হচ্ছে, একটি হলো লকডাউন আর অন্যটি হলো কোভিড।

স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা মারাত্বক মানষিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। যে বয়সে যার যেটা বাধ্যতামূলক করার কথা সেই সময়ে পরাধীন থেকে স্বাধীন হলেই আসে বিপদ, আর সেই বিপদটা  শিক্ষার্থীদের বেলায় প্রযোজ্য।

রাস্তাঘাট দোকান শপিংমল খোলা রয়েছে শিক্ষার্থীরা কিন্তু বাসায় আবদ্ধ হয়ে রয়নি। তারা ঐ সুযোগটা গ্রহণ করেছে। একজন শিক্ষার্থীরা দোকান কিংবা শপিংমলে গেল কেনাকাটা করলো, রাস্তায় ঘুরলো কিন্তু তাকে স্কুল বা কলেজে আসতে দিলেন না! ব্যপারটা কেমন জেন হয়ে গেলো না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা পরিস্থিতি স্বাবাবিক হয়ে এলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যবস্থা করা হবে। প্রশ্ন হলো দোকানপাট, শপিংমল রেস্তোরায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক?

আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন দ্বীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে এর প্রবাবটা কোথায় গিয়ে দ্বাড়াবে?

সমাজ ও রাষ্টে কতটা প্রভাব পড়বে?

শিশুরা কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে?

বিশেষ করে প্রান্তিক শিশুরা?

ইউনিসেফের তথ্যমতে বিশ্বের ১৪ টি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি বন্ধ রাখা হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। করোনার দ্বীতিয় বছরেও শিশুরা স্কুলে যেতে পারবে না বা সীমিতভাবে লেখাপড়া করবে এটা গ্রহণ করা যায় না।

স্কুল খোলার এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে । এর জন্য পরিকল্পনা করতে হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান(ঢাবি.) এর মতে ছোট ছোট পাইলট প্রকল্প করে স্বাস্থবিধী মেনে স্কুল কলেজ খোলা যায় কিনা?

অনলাইন শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা শতভাগ উপকৃত হয়না, তার উপর গরীব ও অসচ্ছল পড়ীবারের শিক্ষর্থীরা ডিভাইস ও ইন্টারনেট এর অভাব থাকায় অনলাইন শিক্ষায় সবাই অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শহর ও মফস্ব্যল থেকে গ্রামের শিক্ষার্থীরা এবং কম আয়ের পরিবারের শিশুরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এখনি সময় শিশুদের শিক্ষায় মননিবেশ রাখা অন্যথায় নিউনরমাল বিশ্বে নেতৃত্বশন্য হয়ে পড়বে। মানব জাতীর সামনে এগিয়ে যাবার পথটা কঠিন হয়ে পড়বে।

তবে হ্যা শিক্ষা যেমন জরুরী ঠিক বেচে থাকাও জরুরী। মনে রাখতে হবে কোন কিছুই যেন খুত খুশির কারন না হয়!

লেখক –

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (রুবেল)সিনিয়র কো-অর্ডিনেশন অফিসার,

ড্যাফোডিল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট,

পান্থপথ, ঢাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা