March 29, 2024, 7:10 am

আমি ছাত্র মহামারীতে আমার দায়বদ্ধতা

২ জুন ২০২১,বিন্দুবাংলা টিভি. কম,রিসালাত মুন্সি :

করোনা ভাইরাস বা কেভিড-১৯ সারাবিশ্ব এখন বড় আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও এসেছে করোনার থাবা। সারা দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতায় এ সময় অনেকেই যখন কর্মক্ষেত্র থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন ঠিক সেই মুহুর্তে আমরা মেঘনা উপজেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনের নানা পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে আমি তরুণদের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী টিম(উদ্দীপ্ত তরুণ) প্রস্তুত করি।
আমি মোঃরিসালাত,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাদের শিক্ষার্থী।

আমরা যেই সময় টা মানুষের জন্য কাজ করেছি,এইটা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং সময়। নিজেদের পরিবার পরিজন থেকে,নিজেকে আলাদা রেখে আমরা মানুষকে সেবা দিয়েছি,পাশের দাড়িয়েছি অসহায়দের। আমাদের কে অনেকেই সাপোর্ট দিয়েছেন,মানসিক ভাবে,আর্থিক ভাবে,পরিশ্রম করে,পরামর্শ দিয়ে।তাদের অনুপ্রেরণাই দেশের ক্রান্তিলগ্নে আমরা মানবতার সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। তারপর ও মুষ্টিময় কিছু লোক আছে যারা ভালো কাজ করলেও ওইটার নানা রমক সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাদের কাছ থেকে।বৈপরীত্য আছে বলেই আমরা বস্তুর স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারি।
তারপরও আমরা থেমে যাইনি,নিজেদের সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে কাজ করেছি। কথায় বলে, ফুল আপনার জন্য ফোটে না। অন্যের জীবন সুন্দর এবং সুবাসিত করার জন্যই ফুল ফোটে।
করোনায় আমরা অনেক কাজ করেছি,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ হলোঃ

* জনসচেতনতা তৈরির উদ্দেশে মাইকিং
* সংক্রমণরোধী স্প্রে ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। *মাস্ক, সাবান, চাল-বডাল, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ
প্রয়োজনীয় নানা উপকরণ বিতরণ করা।
*মসজিদ, সড়ক, জনবহুল জায়গা জীবাণুমুক্ত করতে
জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে।
* মসজিদে ঢুকার আগে ভালো ভাবে সাবান দিয়ে হাত
দোয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া।
*দেশ বা দেশের বাইরে থেকে এলে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত
করা।
*লকডাউন এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের
জিনিসপত্র সরবরাহ করা।
*করোনা রোগীর জন্য হরেক রকম ফল (ভিটামিন-সি)
ফল নিজেরা গিয়ে দিয়েছি।
*এলাকায় খাদ্য সহায়তা পাওয়া এবং না পাওয়াদের
তালিকা প্রস্তুত করা।
*ফোন কলের মাধ্যমে মধ্যবিত্ত,কর্মহীন পরিবারে কাছে
খাবার পৌঁছে দেয়া।
*অসহায় পরিবারের অসুস্থ ব্যক্তি ঔষধ বিনামূল্যে
সরবরাহ করা।
* লকডাউনে শ্রমিক সংকটে কৃষকের বিনামূল্যে ধান
কেটে দিয়েছি।
* গরীব অসহায় পরিবারে জন্য বিনামূল্যে সবজি বাজার
দিয়েছি প্রতিটি ইউনিয়নে।
* ১ টাকায় স্বাদের বাজার দিয়েছি আমরা।
*রমজানে রোজাদারদের জন্য ইফতার বিতরণ করেছি।
* ১ টাকা ঈদের বাজার সুব্যবস্থা করেছি মধ্যবিত্ত,
কর্মহীন,হত-দরিদ্র পরিবারের জন্য।
*রাস্তার পাশে ছিন্নমূল,অসহায়দের জন্য খাবার তৈরি
করে পৌঁছে দিয়েছি।
* শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি আমরা।
*করোনার মধ্যে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ায় উসাহিত
করার জন্য GPA-5 প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছি।
* মেঘনা উপজেলার তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে ব্যাডমিন্টন
খেলার টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি।
* লকডাউনে তরুণদের মানসিক চাপ দূর করার
জন্য,অনলাইনে আড্ডার ব্যবস্থা করেছি।

এছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম প্রোগ্রাম করেছি আমরা।মানুষের জন্য কাজ করতে পারলে নিজের মধ্যে আত্নতৃপ্তি পাই।
আমি মনে করি পারস্পরিক সহযােগিতাই মানবজীবনের উন্নতির মূল। এই সহযােগিতা ছাড়া সুস্থ, সুন্দররূপে বাঁচা সম্ভব নয়। অন্যকে বঞ্চিত রেখে কেউ কখনাে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারে না। তাই সংকীর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে বৃহত্তর মানুষের কথা ভাবতে হবে। সেখানেই রয়েছে মানবজীবনের সার্থকতা। অন্যের সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে এগিয়ে যাওয়াই প্রত্যেকের কর্তব্য। প্রয়ােজনে নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করার মহৎ মানসিকতাই দিতে পারে বৃহত্তর মুক্তি। পুষ্পের ন্যায় পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে জীবনের সার্থকতা।
ইনশাআল্লাহ মানবিক কাজে সব সময় মেঘনার মানুষের পাশে থাকবো।

লেখক –  ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা