April 18, 2024, 11:47 pm

পরকীয়া প্রেম: প্রেমিকের স্ত্রীর সাথে প্রবাসীর স্ত্রীর সংঘর্ষ

২৯ ডিসেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে গোপনে দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া প্রেমিকার সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। গত শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের হাজী আলা উদ্দিনের খামার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।

পরকীয়া প্রেমিকা একই এলাকার প্রবাসী মোছলেহ উদ্দিনের স্ত্রী ছকিনা বেগমের সাথে পরকীয়া প্রেমিক বেলাল হোসেনের স্ত্রী লাইজু বেগমের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজন এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিকা ছকিনা বেগম এ ঘটনার সাথে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানকে জড়িয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

প্রেমিকা ছকিনা বেগমের ৩টি সন্তান রয়েছে। প্রেমিক বেলাল হোসেন বিবাহিত এবং ২ সন্তানের জনক। বেলাল রামগতির আলেকজান্ডার ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিল। গত ১৫ বছর আগে নদী ভাঙ্গনে ঘর বাড়ি হারালে স্থানীয় আলা উদ্দিন তার খামার বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে তাকে নিযুক্ত করে এবং বসবাসের জায়গা দেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দুই পুলিশ কর্মকর্তা সরেজমিনে এসে সংশ্লিষ্ট স্থানীয়দের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন।

এর আগে রোববার উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের প্রবাসী মোছলেহ উদ্দিনের স্ত্রী ছকিনা বেগম ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান এবং গ্রাম পুলিশ তাজল ইসলামের নামে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ চাঁদাদাবিসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেন।

স্থানীয়দের বক্তব্য গ্রহণের সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট ছকিনার পরকীয়া প্রেমিক বেলালের স্ত্রী লাইজু আক্তার (২৫) বলেন, ছকিনা বেগমের স্বামী মোছলেহ উদ্দিন প্রবাসে থাকার সুবাদে আমার স্বামী মো. বেলাল হোসেনের সাথে তার অবৈধ পরকীয়া প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। গত ৩ বছর যাবত তাদের সর্ম্পক চলে আসছে। এটা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়ভাবে ৫-৬ টি শালিসী বৈঠক হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের সাংসারিক নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে পীড়াপিড়ির কারণে গত ১০-১৫ দিন আগে আমার স্বামী বেলাল তার ফোন বিক্রি করে দেয়। সে কারণে গত ১০-১৫ দিন ছকিনা আমার স্বামীর সাথে হয়তো কথা বার্তা বলতে পারেনি। এর মাঝে ছকিনা মনে করেছিল আমি সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছি। ফলে সে আমার স্বামীর কাছে আসার সুযোগ খোঁজে। ঘটনার সময় শনিবার রাত ১২টায় আমার স্বামী তখনো ঘরে ফিরেনি।

তিনি আরো বলেন, হঠাৎ আমি শুনতে পাই আমার ঘরের দরজা ধরে কেউ যেন ধাক্কা দিচ্ছে। আমি দরজা খুলতে দেখি ছকিনা বেগম। তখন তাকে ঝপটে ধরি। এতে ছকিনার সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়। আমি লাঠি দিয়ে ছকিনাকে ২/৩টি আঘাত করি। সেও আমাকে ২/৩ আঘাত করে। আমাদের শোরগোলে স্থানীয় দোকান থেকে আমার স্বামীসহ কিছু লোকজন এসে উপস্থিত হয়। তাদের উপস্থিতিতে আমি আমার খামারের মালিক হাজী আলা উদ্দিন এবং স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিজানুর রহমান কে খবর দিই। তারা এসে গ্রাম পুলিশ কে খবর দেয়। গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী ছকিনার শ্বশুর বাড়িতে খবর দেয়।

পরে রাত প্রায় দেড়টা দুইটার দিকে ছকিনার শ্বশুর বাড়ি থেকে তার চাচা শ্বশুর অলি আহম্মদ ডাট, আবু তাহের কালাম মিয়া এবং তার জা, ননদ কোহিনুর এসে ছকিনা বেগমকে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে ছকিনার শ্বশুর মোহাম্মদ উল্লাহ বেপারী (৬০) বলেন, আমার ছেলের বউয়ের এ রকম চলাচল নিয়ে অতীতেও বহু শালিস দরবার হয়েছে। আমরা তার নিকট অনুরোধ করেছি সে যেন এ পথ ত্যাগ করে। কিন্ত বউ তাদের কথা না শুনে শ্বশুর শ্বাশড়িকে নির্যাতন শুরু করে। ওই সময় নিজের ছেলের বউয়ের অত্যাচার এবং বেপরোয়া জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে অপর দুই চাচা শ্বশুর ও হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সরেজমিন তদন্তের সময় স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা