March 29, 2024, 12:00 pm

গা-ঢাকা দিয়েছে সেই মাতব্বরেরা

২৫ নভেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, জামালপুর প্রতিনিধি:

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে গ্রাম্য সালিসে ৮৫ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে ১২ বছরের শিশুর বিয়ের ঘটনাটি উচ্চ আদালত তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পর গা-ঢাকা দিয়েছে দুই পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় মাতব্বরেরা।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া গ্রামে গিয়ে ওই দুই পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায়নি।

গ্রাম্য সালিসে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবদিন নাদুকে এলাকায় পাওয়া গেলেও সালিসে উপস্থিত অন্যান্য স্থানীয় মাতব্বরেরা আত্মগোপনে আছেন। বিষয়টি নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি স্থানীয়রা।

ইউপি সদস্য জয়নাল আবদিন নাদু বলেন, বিষয়টি নিয়ে ২ দফা গ্রাম্য সালিস হয়েছে। ১২ বছরের ওই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধ দোষ স্বীকার করে। ধর্ষণের স্বীকার ওই শিশুর বয়স জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ১৮ বছর ৯ মাস হওয়ায় মেয়ের সম্মতিতেই ওই বৃদ্ধের সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে উভয় পরিবারের সদস্যরা বিয়ের কাজটি সম্পন্ন করলে তৃতীয় দফায় গ্রাম্য সালিসে তাদের বিয়ের সামাজিক মর্যাদা দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘৮৫ বছরের বৃদ্ধকে দোররা মেরে ১২ বছরের শিশুর সঙ্গে বিয়ে দিলেন মাতবররা’ শীর্ষক খবরটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চরআমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামে ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সঙ্গে ১২ বছরের এক শিশুর বিয়ে দিয়েছেন গ্রাম্য মাতবররা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রাম্য সালিসে ওই বৃদ্ধের নাতি শাহিনের (১৮) অপরাধের দায়ভার দাদার ওপর চাপানো হয়। সালিসে বৃদ্ধ মহিরকে ১০ দোররা মেরে তার সঙ্গে জোর করে শিশুটির বিয়ে দেওয়া হয়। শিশুটি স্থানীয় কওমী মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। মহির উদ্দিনের নাতি শাহিনের সঙ্গে শিশুটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শাহিনের ধর্ষণে শিশুটি গর্ভধারণ করে। গত ১০-১৫ দিন আগে তার গর্ভপাত ঘটানো হয়। বিষয়টি ফাঁস হলে স্থানীয় মাতবররা সালিস করে নাতি শাহিনের অপরাধের দায় চাপান বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের ওপর।

মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি নজরে এনে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ চান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আদালতের নজরে আনার পর প্রকৃত ঘটনা কি ছিল এবং কি ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মৌখিক আদেশ দেয়। আদালতের মৌখিক আদেশের বিষয়টি জামালপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার অবহিত করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা