April 19, 2024, 11:30 am

মালিতে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক বাহিনী

১৯ আগষ্ট ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্ট:
সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়েছেন মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর বিদ্রোহীরা তাকে ও তার প্রধানমন্ত্রীকে আটক করে। এরপর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিলুপ্ত করেন সরকার ও পার্লামেন্ট। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আমি রক্তপাত চাই না। বিদ্রোহী সেনারা প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পার্লামেন্ট স্পিকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এর কয়েক ঘন্টা আগে প্রেসিডেন্ট কেইতা এবং প্রধানমন্ত্রী বুবু সিসেথকে রাজধানী বামাকোথতে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় আঞ্চলিক শক্তিগুলো এবং ফ্রান্স নিন্দা জানিয়েছে। ক্ষমতা হারানো প্রেসিডেন্ট কেইতা বলেছেন, সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট অংশ তাদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই ক্ষমতার ইতি চাইছেন। এখানে আমার কি কিছু করার আছে? কারো প্রতি আমার কোনো ঘৃণা বা ক্ষোভ নেই। দেশের প্রতি আমার ভালবাসা এমন ঘৃণা বা ক্ষোভকে অনুমোদন করে না। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।

এর আগে বিদ্রোহী সেনাবাহিনী কাতি শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, বেতনভাতা নিয়ে এবং জিহাদিদের সঙ্গে অব্যাহত লড়াইয়ের কারণে সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন কেইতা। কিন্তু তার সরকারে মারাত্মক দুর্নীতি, আর্থিকখাতে অব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভিতর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে জনগণের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে এসব ইস্যুতে বেশ কয়েকটি বড় বিক্ষোভ হয়েছে। রক্ষণশীল ইমাম মাহমুদ ডিকোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় একটি নতুন জোট সেখানে সংস্কার প্রস্তাব করেছে। তারা একটি ঐকমতের সরকার গঠনের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কেইতা।

মঙ্গলবার সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন কাতি ক্যাম্পের উপপ্রধান কর্নেল মালিক ডিয়াও। তার সঙ্গে ছিলেন কমান্ডার জেনারেল সাদিও কামারা। বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ওই ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিদ্রোহী সেনারা রাজধানীমুখী যাত্রা শুরু করেন। এ সময় রাস্তার দুথপাশ থেকে জনতা তাদেরকে স্বাগত জানায়। কারণ, তারাও চাইছিল প্রেসিডেন্ট কেইতার পদত্যাগ। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে প্রেসিডেন্ট কেইতা ও তার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঝড়ো গতিতে প্রবেশ করেন সেনারা এবং তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় দুজনেই ওই বাসভবনে ছিলেন।

আটক করা হয়েছে প্রেসিডেন্টের ছেলে ন্যাশনাল এসেম্বলির স্পিকারকেও। তবে এই অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সেনাদের সংখ্যা সম্পর্কে স্পষ্ট জানা যায় নি। এর আগে ২০১২ সালেও সেখানে সেনা বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। তখনও এতে জড়িত ছিল কাতি ক্যাম্প।

সেনা বিদ্রোহ বা অভ্যুত্থানের খবরে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন। তারা আটক বেসামরিক কর্মকর্তাদের মুক্তি দিতে সেনাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আঞ্চলিক সংগঠন দ্য ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস বলেছে, মালির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিতে সম্মত হয়েছে তাদের ১৫টি সদস্যদেশ। একই সঙ্গে মালির সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করাতে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা